Header Ads Widget

Responsive Advertisement

রক্ত সংবহনতন্ত্রের কয়েকটি রোগ ও প্রতিকার / Several diseases and remedies of the circulatory system

 


হার্ট অ্যাটাকঃ

যখন কারও হৃৎযন্ত্রের কোনো অংশে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় কিংবা বাধাঁগ্রস্থ হয়, এতে হৃৎপিন্ডের কোষ কিংবা হৃৎপেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ফলে মায়োকারডিয়াল ইনফ্রাকশন অথবা করোনারী থ্রোমবসিস নামে হার্ট অ্যাটাক ঘটে। বাংলাদেশে হৃৎরোগ বিশেষ করে করোনারি হৃৎরোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। হৃৎপিন্ড রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন ও খাবারের সারাবস্তু অর্থাৎ পুষ্টিকর পদার্থ রক্তনালির মধ্যদিয়ে দেহের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেয়। 

নিজের কাজ সঠিকভাবে করার জন্য অর্থাৎ তার মাংসপেশির শক্তি অর্জনের জন্য হৃৎপিন্ডের তিনটি প্রধান রক্তনালি আছে। এগুলোর মধ্যে অনেক সময় চর্বি জমে রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। ফলে প্রানঘাতী রোগ হার্ট অ্যাটাক হয়। বর্তমান সময়ে হার্ট অ্যাটাকে শুধু ৪০-৬০ বছর বয়সী লোকেরাই আক্রান্ত হচ্ছে না, অনেক ক্ষেত্রে ১৮ বছরের তরুণরাও এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

এ রোগের কারণগুলোর মধ্যে দেহের ওজন বেড়ে যাওয়া প্রধান। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত থাকলে, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস যেমন অধিক তেলযুক্ত খবার (বিরানি, তেহারি ইত্যাদি), ফাস্টফুড (বার্গার, বিফ বা চিকেন প্যাটিস ইত্যাদি) খাওয়া, অলস জীবনযাপন এবং শারীরিক পরিশ্রম না করার ফলে এই রোগ দেখা যায়। তদুপরি সর্বদা হাতাশা, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ও বিমর্ষ থাকায় যেকোনো বয়সে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

রোগের লক্ষণসমূহঃ হার্ট অ্যাটাক হলে বুকে অসহনীয় ব্যথা অনুভূত হয়। বিশেষ করে বুকের মাঝখানে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হয় যা প্রাথমিকভাবে এন্টাসিড জাতীয় ঔষধ খেলেও কমবে না। ব্যথা বা দিকে বা সারা বুকে ছড়িয়ে যেতে পারে। ব্যথা অনেক সময় গলা ও বাম হাতে ছড়িয়ে যেতে যায়। রোগী প্রচন্ডভাবে ঘামতে থাকে ও বুকে ভারি চাপ অনুভব করছে বরে মত প্রকাশ করে।

প্রতিকারঃ এমন অবস্থা দেখা ‍দিলে অবহেলা না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইসিজি করে ডাক্তারের পরামর্শ দেওয়া দরকার।

করোনারি হৃৎরোগ এক মারাত্মক হৃৎরোগ। এ রোগ থেকে বাঁচতে হলে কিছু নিয়ম মেনে চলা দরকার, যাতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়। যেমন- ধূমপান না করা ও নিয়মিত ব্যায়াম করা বা হাঁটা, খাদ্যভ্যাস পরিবর্তন করা, কাঁচা ফল ও শাকসবজি বেশি বেশি খাওয়া। চর্বিযুক্ত খাবার না খাওয়া, ভাজা খাবার, মশলাযুক্ত খাবার, ফাস্টফুড খাওয়া বাদ দেওয়া।

বাতজ্বরঃ

স্ট্রেপটোকক্কাস অনুজীবের সংক্রমণে সৃষ্ট শ্বাসনালির প্রদাহ, ফুসকুড়িযুক্ত সংক্রামক জ্বর, টনসিলের প্রদাহ অথবা মধ্যকর্নের সংক্রামক রোগ বাতজ্বরের উল্লেখযোগ্য লক্ষণ। সাধারণত শিশুকালেই এ রোগের আক্রমণ শুরু হয় এবং দেহের অনেক অঙ্গপ্রতঙ্গ আক্রান্ত হয়, বিশেষ করে হৃৎপিন্ড। হৃৎপিন্ড যদি এ রোগে পূর্নভাবে আক্রান্ত নাও হয়, হৃৎপেশি এবং হৃৎপিন্ডের কপাটিকা বা ভালভ অনেক সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে হৃৎপিন্ড যথাযথভাবে রক্ত পাম্প করতে সক্ষম হয না এবং দেহে রক্ত প্রবাহের পরিমান কমে যায়।

অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা এ রোগ সহজে শনাক্ত করতে ব্যর্থ হন। পরে রোগের প্রকোপ বেড়ে গেলে ওজন হ্রাস, এনিমিয়া, ক্লান্তি, ক্ষুধামন্দা, চেহারায় ফ্যাকাশে ভাব ইত্যাদি দেখা দেয় এবং রোগের উপস্থিতি বুঝা যায়। পরবর্তী সময়ে অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, ফুলে যাওয়া এবং ত্বকে লালচে বঙ দেখা দেয়। প্রাথমিক পর্যায়ে এ রোগ শনাক্ত করা গেলে পেনিসিলিন জাতীয় ঔষধ যথাযথভাবে প্রয়োগ এ রোগের সংক্রমণ থেকে রেহাই পাওয়া যায়। অনেক চিকিৎসক আক্রান্ত ছেলেমেয়েদের প্রাপ্ত বয়সে না ও পৌছানো পর্যন্ত নিয়মিতভাবে পেনিসিলিন খাবার পরামর্শ দেন।

হৃদপিন্ডকে সুস্থ রাখার উপায়ঃ

মানুষ পৃথিবীতে ভূমিষ্ট হবার আগে থেকেই তার হৃৎযন্ত্র কাজ করা শুরু করে এবং মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত নির্দিষ্ট গতিতে চলতে থাকে। মানুষের বাঁচামরায় হৃৎযন্ত্রের ভূমিকা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন। হৃৎযন্ত্র সুস্থ রাখার জন্য সঠিক জীবনধারা ও খাদ্য নির্বাচনের প্রয়োজন রয়েছে। নানা ধরনের তেল বা চর্বি জাতীয় খদ্য হৃৎযন্ত্রের কার্যক্রমকে ব্যাহত করে। রক্তের কোলেস্টেরোল হৃৎপিন্ডের রক্তনালিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে হৃৎযন্ত্রকে ক্ষতি করে থাক।

মাদক ও নেশা সেবনে হৃৎযন্ত্রের ক্রিয়া বা হৃৎস্পন্দন মানের থেকে বৃদ্ধি পায়। ফলে মাদকসেবী কিছুটা মানসিক আনন্দ ও প্রশান্তি পেলেও তার হৃৎযন্ত্রের প্রভূত ক্ষতি হয়। সিগারেটের তামাক অথবা জর্দার নিকোটিনের বিষক্রিয়া শরীরের অন্য অংশের মতো হৃৎপেশির ক্ষতি করে। সঠিক খাদ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সুস্থ থাকা যায়। মেদ সৃষ্টিকারী খাদ্য যেমন তেল, চর্বি, অতিরিক্ত শর্করা পরিহার ও সুষম খাদ্য গ্রহন, প্রতিদিন পরিমিত ব্যায়াম এবং হাঁটা চলার মাধ্যমে সুস্থ জীবন লাভ করা যায়।

রক্তের অস্বাভাবিকতা- লিউকেমিয়াঃ

ভ্রুন অবস্থায় যকৃত ও প্লীহায় লোহিত রক্ত কণিকা উৎপন্ন হয়। শিশুদের জন্মের পর থেকে লাল অস্থিমজ্জা হতে লোহিত কণিকা উৎপন্ন শুরু হয়। এগুলো প্রধানত দেহে অক্সিজেন সরবরাহের কাজ করে। যদি কোন কারনে লোহিত অস্থিমজ্জা লোহিত কনিকা উৎপাদনে ব্যর্থ হয় এবং অস্বাভাবিক শ্বেত কনিকার বৃদ্ধি  ঘটে তাহলে রোগের লক্ষনগুলো প্রকাশ পায়।

রক্তের ক্যান্সার বা লিউকোমিয়া রক্তের অস্বাভাবিকাতজনিত রোগ। সাধারনত অল্পবয়স্ক ছেলে-মেয়েরা এ রোগে আক্রান্ত হয়। দীর্ঘ মেয়াদী জ্বর, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, পায়ের গিটে ব্যথা হয়ে ফুলে উঠা, লাসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া, রোগীর দুর্বল বোধ করা, হাত বা পা কাঁপাতে থাকা, দেহত্বকে ছোট ছোট লালবর্নের দাগ হওয়া ইত্যাদি এ রোগের লক্ষন। 

চিকিৎসাঃ বর্তমানে প্রাথমিক অবস্থায় এ রোগ নির্ণয় করা গেলেও রোগীর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারলে এ রোগ নিরাময় করা সম্ভব। সাধারণত অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা করা হয়।

রক্তে উচ্চ কোলেস্টেরোলের সমস্যাঃ

দেহের অন্যান্য অঙ্গের মতো হৃৎপিন্ডে অক্সিজেন ও খাদ্যসরবাহের প্রয়োজন হয়। হৃৎপিন্ডের করোনারী ধমনি গত্রে চর্বি জমা হওয়ার ধমনিতে পর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহে বিঘ্ন ঘটে ফলে হৃৎপিন্ড পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও খাদ্যসার না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়। রক্ত চলাচল কমে যাওয়ার কারনে বুকে ব্যথা অনুভূত হয়। এই অবস্থাকে অ্যানজিনা বলা হয়। এছাড়া ধমনিগাত্রে অধিক চর্বি জমা হলে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয় ফলে করোনারি হৃৎরোগের সম্ভাবনা বহুলাংশে বেড়ে যায়।

কোলেস্টেরোলের কাজ- উপকারিতা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিঃ

কোলেস্টেরোলের কোষপ্রাচীর তৈরি ও রক্ষার কাজ করে। প্রতিটি কোষের ভেদ্যতা নির্ণয় করে বিভিন্ন দ্রব্যাধি কোষে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে। মানবদেহের জনন হরমোন এনড্রোজেন ও ইস্ট্রোজেন তৈরিতে সাহায্য করে। অ্যাডরেনাল গ্রন্থির হরমোন ও পিত্তরস তৈরিতে কোলেস্টেরোলের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। কোলেস্টেরোল পিত্ত তৈরি করে। সূর্যালোকের উপস্থিতিতে চামড়ায় কোলেস্টেরোল থেকে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। কোলেস্টেরল মাত্রা দেহের চর্বিতে দ্রবনীয় ভিটামিনকে (এ, ডি, ই ও কে) বিপাকে সহায়তা করে। স্নায়ুকোষের কার্যকারিতার জন্যে কোলেস্টেরোল প্রয়োজন। দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সাথে কোলেস্টেরোল ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।

গবেষণায় এখন প্রমাণিত যে রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরোল হৃৎপিন্ড এবং রক্ত সংবহনের বিশৃঙ্খলার সাথে জড়িত। কোলেস্টেরল পিত্তরসের অন্যতম উপাদান হলেও এটি একটি বর্জ পদার্থ এবং যকৃতের মাধ্যমে দেহ থেকে অপসারিত হয়। পিত্তরসে কোলেস্টেরোলের মাত্রা বেড়ে তা তলানির মতো পিত্ত থলিতে জমা হয়। কোলেস্টেরোলের এ তলানিই শক্ত হয়ে পিত্তথলির পাথর নামে পরিচিত হয়।

যে সব কারণে উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার ঝুঁকি থাকেঃ বাবা বা মায়ের উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তার সন্তানদের উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এছাড়াও যারা স্নায়ুবিক চাপে বেশি ভোগেন অথবা ধূমপানের অভ্যাস থাকলে উচ্চচাপ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। দেহের ওজন বেশি বেড়ে গেলে কিংবা খাদ্যে লবন ও চর্বিযুক্ত উপাদান বেশি খেলে এমনকি পরিবারের সদস্যদের ডায়াবেটিস বা কোলেস্টেরোলের পূর্ব ইতিহাস থাকলে উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়। সন্তান প্রসবের সময় খিঁচুনী রোগের কারনে মায়ের রক্তচাপ বৃদ্ধি পেতে পারে।

Here you will find information about all the doctors in Bangladesh. Here you will find a list of all the doctors in Bangladesh. Special information for readers If you want to get information on any other topic, please comment below. 
Tags: Barisal doctor List

Dear doctors, if you want to change your information, please comment to speak in this e-mail. (deardoctors24@gmail.com)

Post a Comment

0 Comments

About us

In this website we will provide you with the service of all the doctors in Bangladesh and their medical system. Here you will find information about the sitting hours and services of all doctors in all districts of Bangladesh.