Header Ads Widget

Responsive Advertisement

পেঁয়াজ / পেঁয়াজ নিয়ে কিছু তথ্য / Some information about onions



পিঁয়াজ পৃথিবীর সকল স্থানে একটি প্রসিদ্ধ সবজি। যা ব্যাতিত তরকারী পাকানো খুবই দুস্কর। এটি পৃথিবির সকল দেশের সর্বস্তরের মানুষের জন্য সহজ প্রাপ্য। নিচে পেঁয়াজ নিয়ে কিছু তথ্য দেওয়া হলোঃ

পিঁয়াজের উপাদানঃ পিঁয়াজে ভিটামিন এ, বি, সি ছাড়াও ফসফরাস, লবন, পোটিন ও ইস্পাত সমৃদ্ধ। পিঁয়াজে ৮০% পানি, ১০% কার্বহাইড্রেট বাকী ১০% অন্যান্য। পিঁয়াজ সাধারনত গরম এবং শুষ্ক।

পিঁয়াজের বিশেষত্বঃ পিঁয়াজ এমন একটি নেয়ামত যে, যখন বনী ইসরাইল জাতি মান্না ছালওয়া পাওয়ার পরেও হযরত মুছা আলাইহিছ ছালাম এর কাছে পিঁয়াজ, রসুন হত্যাদির দরখাস্ত করেছিলেন, তখন মহান আল্লাহ তায়ালা তাদের জন্য এসবের ব্যাবস্থা করেন। যার কথা পবিত্র কুরআর পাকে উল্লেখ করা হয়েছে। পুরাতন মিশরবাসী পিঁয়াজের উপকারীতা অনুবভ করে পিঁয়াজকে দেবতা সমত্যুল্য মনে করত। এমনকি মিশরের বিধর্মীরা পিঁয়াজকে পূজাও করত।

পিঁয়াজের  গুনাগুনঃ মানুষের শরীরে যে কয়টি রসের প্রয়োজন যেমন মধু, অম্ল, লবন, তিক্ত, কটু ও কষারু। সব কয়টিই পিঁয়াজের মধ্যে বিদ্যমান আছে। পিঁয়াজ  শরীরে উদ্দীপনা বাড়ায়।

মাথা ব্যাথায় পিঁয়াজঃ পিঁয়াজ কেটে কপালে ও কান  পট্টিতে মালিশ করলে ব্যাথা  কমে যায়। সামান্য মাথা ব্যাথা হলে ঘ্রান নিলেত ব্যাথা কমে যায়। অতিরিক্ত ব্যাথা হেইলে উক্ত মালিশসহ পায়ের তালুতে মালিশ করলে তৎক্ষনাৎ কমে যাবে।

চুল উঠায় পিঁয়াজঃ পিঁয়াজের রস মালিশ করলে চুল উঠা বন্ধ হয় এবং কালো চুল গজায়, চুল ভাঙ্গা কমে যায়। রোজ একবার করে ৭ দিন ব্যাবহার করতে হবে।

টাক রোগে পিঁয়াজঃ মাথার টাকে পিঁয়াজের রস মালিশ করলে টাকে চুল গজায়। রোজ ২ বার করে ২১ থেকে ৪০ দিন।

মাথার উঁকুনে পিঁয়াজঃ পিঁয়াজের রস মাথায় দিলে উঁকুন মরে যায়। রোজ ১ বার করে ৭ দিন।

ব্রনে পিঁয়াজঃ পিঁয়াজের রস নিয়মিত মালিশ করলে ব্রন কমে যায়।

চোখের বিভিন্ন রোগে পিঁয়াজের কাজঃ ২/৩ ফোটা পিঁয়াজের রস সমপরিমান মধুর সাথে মিশিয়ে  চোখে দিলে চোখের জ্বালা, ফুলা, পানি পড়া, কম দেখা রোগ হমে যায়। রোজ ২ বার করে মোট ৭ দিন। দুই চামচ কালো সুরমা এবং দুই চামচ পিঁয়াজের রস একত্রে মিশ্রন করে শুকাতে হবে। শুকিয়ে গেলে পুনরায় পিঁয়াজের রস দিয়ে শুকাবে, এভাবে তিন দিন পরে উক্ত শুরমা চোখে লাগালে চোখের যাবতীয় রোগ আরোগ্য হবে। দৈনিক ২ বার করে ৭ দিন।

কানের বিভিন্ন রোগে পিঁয়াজের কাজঃ কানের সকল রোগে পিঁয়াজের রস বের করে সামান্য গরম করে ২/৩ ফোটা রস কানে দিলে কান পাকা, কানের ব্যাথা, কম শোনা এবং কানের ময়লা দূর হওয়া এসব রোগ কমে যায়। রোজ ২ বার করে তিন ‍দিন।

নাকের বিভিন্ন রোগে পিঁয়াজঃ নাক দিয়ে রক্ত পড়লে ৪/৫ ফোটা পিঁয়াজের রস নাকে দিলে নাকছির রক্ত বন্ধ হয়ে যায়।

গলা ফুলায় পিঁয়াজঃ পিঁয়াজ পিষে সামান্য গরম করে প্রলেপ দিলে গলা বেদনা/ গলা ফুলা/ টনসিল আরোগ্য হয়।

দাঁতের রোগে পিঁয়াজঃ নিয়মিত সামান্য পরিমানে পিঁয়াজ খেলে দাঁতের গোড়া মজবুত হয়। দাঁত শক্ত হয়।

সর্দিতে পিঁয়াজঃ পিঁয়াজের রস ৪/৫ ফোটা নস্য হিসাবে নাকে টানলে জ্বর জ্বর ভাব, নাক বন্ধ, কপাল ভার এবং সর্দি কমে যায়। রোজ তিন বার এটা করতে হয়।

কাশিতে পিঁয়াজঃ একটি করে পিঁয়াজ চিবিয়ে খেয়ে সামান্য গরম পানি খেলে কাশি উপশম হয়। রোজ ৩ থেকে ৪ বার।

বমিতে পিঁয়াজঃ ১/২ চা চামচ পিঁয়াজের রস সমপরিমান পানিতে মিশিয়ে খেলে বমি বন্ধ হয়।

হেচকীতে পিঁয়াজঃ ১ টি পিঁয়াজ ছিলে নূন দিয়ে খেলে হেচকী কমে যায়। বা ১ চামচ পিঁয়াজের রস সমপরিমান পানিসহ পান করলে এই রোগ কমে যায়। এক ঘন্টা পর পর রোজ ৩/৪ বার।

পেট ব্যাথায় পিঁয়াজঃ পিঁয়াজ আগুনে ভুনে তার রস বের করে গরম অবস্থায় পান করলে পেট ব্যাথা কমে যায়। ১-২ চামচ করে রোজ ৩ বার।

বদ হজমে পিঁয়াজঃ নিয়মিত খাবারের সাথে ২/১ টি পিঁয়াজ খেলে বদহজম কমে যায়। পিঁয়াজের আচার নিয়মিত খেলে বিভিন্ন উপকার হয়।

পাতলা পায়খানায় পিঁয়াজঃ পিঁয়াজের রস এবং করলা পাতার রস বা করলার রস একত্র করে খেলে পাতলা পায়খানা কমে যায়। দৈনিক ৩/৪ বার।

ডাইরিয়ায় পিঁয়াজঃ ২৫ গ্রাম পিঁয়াজ এবং ৮/১০ টি গোল  মরিচ একত্রে পিষে, এক গ্লাস পানিতে শরবত তৈরি করে খেলে ডাইরিয়া কমে যায়। ২৫ গ্রাম করে আধা ঘন্টা পর পর।
সাদা পিঁয়াজ কেটে রৌদ্রে শুকিয়ে গুড়া করে রেখে দিবে। ডাইরিয়া রোগীকে ১ চামচ গুড়া, ১০০ গ্রাম দধির সাথে মিশিয়ে খেতে দিলে সুস্থ হয়ে যাবে। সুস্থ না হলে ১ ঘন্টা পর পর খাওয়াতে হবে। পথ্য হিসেবে ভাত ও দধি খাওয়াতে হবে। ডাইরিয়ার কারনে শলীরের তাপমাত্রা কমে গেলে পিঁয়াজ কেটে বা ছেঁচে রোগীর বোগলে রাখতে হবে। ১৫/২০ মিনিট পর পরিবর্তন করে নতনি ভাবে দিতে হবে। অল্পক্ষণেই শরীরের তাপমাত্রা ঠিক হয়ে যাবে।

ডাইরিয়া প্রতিরোধে পিঁয়াজঃ পিঁয়াজ কুঁচাইয়া ঘরে ও বাড়ীর আঙ্গিনায় ছিটিয়ে রাখলে ঐ ঘরে ডাইরিয়া রোগ দেখা দেয় না।

কোষ্ঠ কাঠিন্য রোগে পিঁয়াজঃ ১ চামচ পিঁয়াজের রস সমপরিমান গরম পানির সাথে খেলে এই রোগ আরগ্য হয়। রোজ রাত্রে ঘুমাবার পূর্বে ৩ দিন।

অর্শ রোগে পিঁয়াজঃ নিয়মিত ১ চামচ পিঁয়াজের রস সামান্য ঠান্ডা পানিসহ খেলে েএই রোগ কমে যায়। ২ বার করে ৭ দিন।
৪ চামচ পিঁয়াজের রস, ১ চা চামচ আখের গুরসহ ভোরে খালী পেটে ৩ দিন। 

প্লীহা রোগে পিঁয়াজঃ পিঁয়াজের রস সামান্য আখের গুরসহ খেলে প্লীহা রোগ আরোগ্য হয়। ৪ চামচ পিঁয়াজের রস, ১ চা চামচ আখের গুড়সহ ভোরে খালী পেটে তিন দিন খেতে হবে।

সাধারন জ্বরে পিঁয়াজঃ  আধা কাপ পিঁয়াজের রস সমপরিমান গরম পানিসহ খেতে হবে। রোজ ২ বার করে ৩ দিন।

নিউমুনিয়া রোগে পিঁয়াজঃ ৮/১০ টি পিঁয়াজবেটে সামান্য ছেরকা বা আটার সাথে মিশিয়ে উত্তপ্ত করে নিউমুনিয়া রোগীর বুকে ছেক দিতে হবে। পোটলা ঠান্ডা হলে নতুন পোটলা তৈরি করে নিতে হবে। একইভাবে ৮/১০ বার।

ফোঁরায় পিঁয়াজঃ পিঁয়াজ ভুনে পিষে প্রলেপ দিলে ফোঁড়া পেকে যায়। ফোঁড়ার  ব্যাথা কমে যায়। পিঁয়াজের রস গরম করে লাগালেও ফোঁড়ার জ্বালা কমে যায়।

পাঁচড়া বা খুজলী রোগে পিঁয়াজঃ পিঁয়াজের রস নিয়মিত খেলে এই রোগ আরগ্য হয়। আধা কাপ করে রোজ ২ বার করে ৭ দিন।

পক্স বা বসন্ত রোগে পিঁয়াজঃ ১ ছটাক পিঁয়াজের রস এবং ২ ছটাক দধি একত্র করে বসন্তের রোগীকে খাওয়ালে বসন্তের জ্বালা কমে যায় এবং দ্রুত কমে যায়। রোজ ২ বার করে ৩ দিন।

ফুলায় পিঁয়াজঃ পিঁয়াজ সিদ্ধ করে বাটর ফুলার উপর প্রলেপ দিলে ফুলা কমে যায়।

ভাঙ্গা বা মচকায় পিঁয়াজঃ পিঁয়াজ বেটে সামান্য গরম করে ভাঙ্গা বা মচায় প্রলেপ বা ব্যান্ডিস করে দিলে দ্রুত আরগ্য হয়। ব্যাথা কমে যায়।

বল্লা, ভিমরুল বা বিছার দংশণে পিঁয়াজঃ পিঁয়াজের রস এবং সমপরিমান নিশাদল একত্রে মিশিয়ে দংশিত স্থানে লাগাইলে যন্ত্রনা কমে যায় এবং বিষ নষ্ট হয়ে যায়।

সাপ বা কুকুরের দংশনে পিঁয়াজঃ সাপ বা কুকুরে কামড় ‍দিলে দংশিত স্থানে পিঁয়াজ বেটে লাগাতে হবে এবং ৮/১০ টি পিঁয়াজ একত্রে খেতে হবে। সর্ব প্রকার বিষ নষ্ট হয়ে যাবে।

ডাইবেটিস বা বহুমূত্র রোগে পিঁয়াজঃ প্রসাবের ধারন ক্ষমতা কমে গেলে নিয়মিত ১ চামচ পিঁয়াজের রস সম পরিমান ঠান্ডা পানিসহ খেলে এই রোগ কমে যায়। দৈনিক ২ বার করে ৭ দিন।

প্রসাবে কসা বা জ্বালায় পিঁয়াজঃ এক ছটাক পিঁয়াজের রস এবং এক ছটাক পানি একত্রে জ্বাল দিয়ে ১ ছটাক পরিমান থাকতে উঠিয়ে প্রসাবে জ্বালা রোগীকে  খাওয়ালে প্রসাবে জ্বালা বা কষা আরগ্য হয়। দৈনিক ২ বার করে ৭ দিন।

পাথরী রোগে পিঁয়াজঃ পিঁয়াজের রস আধা ছটাক করে ভোরে খালী পেটে খেলে মূত্রথলী বা নাড়ীতে পাথর থাকলে টুকরা টুকরা হয়ে বের হয়ে যায়। দৈনিক ভোরে নিয়মিত ১০-১৫ দিন।

যৌন রোগে পিঁয়াজঃ ১০০ গ্রাম পিঁয়াজের রস এবং ১০০ গ্রাম মধু একত্রে জ্বাল দিবে উভয় মিলে ১০০ গ্রাম হলে উঠিয়ে রাখবে। রোজ রাত্রে ১০ গ্রাম পরিমান খেলে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পায়, বীর্য তৈরিসহ গাড় হয়।

যৌন অক্ষমতায় পিঁয়াজঃ একটি পিঁয়াজ আধা কাপ মধুতে ভিজিয়ে রাত্রে খোলা আকাশে নিচে রাখবে। ভোরে মধুসহ পিঁয়াজ চিবিয়া খাবে।
পিঁয়াজের রস ৪ চা চামচ, আদার রস ২ চা চামচ, মধু ২ চা চামচ একত্রে মিশিয়ে খেলে যৌন অক্ষমতা দূর হয়। রোজ ১ বার করে ১৫ দিন।
পিঁয়াজের রস ২ কেজি, মধু ১ কেজি একত্রে করে নিভা আগুনে তাপ দিয়ে ১ কেজি পরিমান হলে উঠিয়ে এক সাথে ১ গ্রাম কস্তরী, ৫ গ্রাম জৈত্রি, ৫ গ্রাম লবঙ্গ, ৫ গ্রাম জায়রন মিশিয়ে কৈটায় ছিপ বন্ধ করে রেখে দিবে। উক্ত মদক খেলে যৌন অক্ষমতা দূর হয়ে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পায়। ২০ গ্রাম করে রোজ ২ বার ২১৪ দিন।
পিঁয়াজের রস ১ কেজি, মধু ৫০০ গ্রাম, আঙ্গুরের রস ২৫০ গ্রাম, আদার রস ১০০ গ্রাম িএকত্র করে নিভা আগুনে তাপ দিয়ে ১ কেজি পরিমান হলে কৌটায় রাখবে। এটা নিয়মিত খেলে যৌন  শক্তি বৃদ্ধি পায়। ২০ গ্রাম করে রোজ ২ বার ২১ দিন।
পিঁয়াজের রস ৫০০ গ্রাম, মধু ২৫০ গ্রাম একত্রে নিভা আগুনে রেখে ২৫০ গ্রাম হলে উঠিয়ে ১০০ গ্রাম সফেদ মুসলীর গুড়া উত্তম রূপে মিশিয়ে কৌটায় রেখে দিবে। এটা নিয়মিত খেলে সর্বপ্রকার যৌন অক্ষমতা দূর হয়। ১০ গ্রাম করে রোজ ২ বার করে ২১ দিন।


চিকিৎসায় পিঁয়াজঃ ঔষধি শাস্ত্রে পিঁয়াজের রয়েছে নানা রকম ব্যবহার। আয়ুর্বেদী ও ইউনানী পুরাতন চিকিৎসকগনের পিঁয়াজের উপকারিতা সম্পর্কে বিশেষ অভিজ্ঞতা ছিল। তারা সকল রোগের প্রতিরোধক হিসাবে পিঁয়াজ ব্যবহার করতেন। রোমের প্রসিদ্ধ ডাক্তার পাতিগোর পিঁয়াজের ২৯০ টি উপকারিতা সম্পর্কে বর্ননা করেছিলেন যার কিছু অংশ এখানে লিপিবদ্ধ করা হল।

খুশকীতে পিঁয়াজঃ পিঁয়াজের রস মাথায় মালিশ করলে খুশকী দূর হয়। চুল কালো হয় এবং নতুন চুল গজায়। দৈনিক গোসলের ১ ঘন্টা আগে নিয়মিত তিন দিন।

মাসিক সংক্রান্ত রোগে পিঁয়াজঃ কফ বা ঠান্ডা জনিত কারনে মাসিক বন্ধ থাকলে পিঁয়াজ ঘিতে ভূনে মিশিয়ে খেলে মাসিক জারী হয়ে যায়। রোজ ১ বার করে ৩ দিন।

স্তনের ঠুনকোতে পিঁয়াজঃ পিঁয়াজের রস গরম করে লাগালে সুফল পাওয়া যায়।

রোগ প্রতিরোধে পিঁয়াজঃ পিঁয়াজ কেটে সাথে রাখলে ছুত, বদ নজর, লু, ভূত প্রেতের Ffছর স্পর্শ করতে পারে না এবং সর্ব প্রকার রোগের জীবানু নষাট হয়ে যায়। পক্স ও ডায়রিয়া রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়।

 

Post a Comment

0 Comments

About us

In this website we will provide you with the service of all the doctors in Bangladesh and their medical system. Here you will find information about the sitting hours and services of all doctors in all districts of Bangladesh.